কোরআন ও বাইবেল পুনর্লিখনের পরিকল্পনা চীনের
- By Jamini Roy --
- 12 October, 2024
চীন সরকার মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন ও খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পুনর্লিখনের পরিকল্পনা করছে। দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে এই ধর্মগ্রন্থগুলো পুনরায় অনুবাদ এবং পরিমার্জন করা হবে। যেখানে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পার্টির নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও বিষয় থাকবে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল এবং তুরস্কের ডেইলি সাবাহ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের নৃ-তাত্ত্বিক ও ধর্মীয় বিষয়াদি সংক্রান্ত কমিটির এক বৈঠকে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। যদিও সরাসরি কোরআন ও বাইবেলের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে প্রস্তাবে ধর্মগ্রন্থগুলোর পুনর্লিখনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এই বৈঠকে বলা হয়, ধর্মগ্রন্থগুলোর অনুবাদ নতুন সময়ের আলোকে করা হবে এবং তাতে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে বিরোধী কোনও উপাদান থাকবে না।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশনায়, বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৬ সদস্যের কমিটি এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চীনের পলিটিক্যাল কনস্যুলেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ওয়াং ইয়াং।
ওয়াং ইয়াং বলেন, চীনা ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নতুন সময় ও সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে ধর্মীয় তত্ত্ব ব্যাখ্যা করবে। এছাড়া, প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোর নতুন সংস্করণে যদি কোনও অংশ সাংঘর্ষিক মনে হয়, তাহলে সেগুলো সেন্সর বোর্ডের মাধ্যমে পরিমার্জন করা হবে।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর আগেও চীনে ধর্মীয় কার্যকলাপকে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে চালানোর ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। চীনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সরকারের কঠোর নজরদারি এবং উইঘুর মুসলিমদের ওপর চলমান নির্যাতনও এই পদক্ষেপের কারণ হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
চীনা সরকারের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর উপর সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই আছে।